‘মব’ সৃষ্টি করে যাদুকাটার বালু লুট জড়িত একাধিক সিন্ডিকেট
- আপলোড সময় : ১৬-১০-২০২৫ ০৭:৪৩:৫৪ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৬-১০-২০২৫ ০৭:৪৩:৫৪ পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার ::
মব সৃষ্টি করে রাতারাতি লুট করা হয়েছে তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর ইজারা বহির্ভূত স্থানের বালু। কেটে নেয়া হয়েছে নদীর দীর্ঘ ১ কিলোমিটারের বেশি পাড়। পরিবেশ সংশ্লিষ্টদের দাবি- স্থানীয় একাধিক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট নদীর পার কাটার সাথে জড়িত থাকলেও কোনো এক অদৃশ্য কারণে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
অনুসন্ধানে জানাযায়, যাদুকাটার পাড় কেটে বালু লুট ও বিক্রির সাথে জড়িত রয়েছে নদী তীরবর্তী অন্তত ৪টি গ্রামের একাধিক সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রভাব খাটিয়ে নদীর তীর বিক্রি ও পার কাটার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত অর্ধশতাধিক ব্যক্তির নাম এসেছে প্রতিবেদকের হাতে।
জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে যাদুকাটা নদীতে বালু উত্তোলনের উচ্চ আদালতের অনুমতি পায় জিনানা এন্টারপ্রাইজ ও তাহিয়া স্টোন ক্রাসার নামের দুইটি প্রতিষ্ঠান। উচ্চ আদালতের অনুমতির পর নদীতে বালু উত্তোলন শুরু হলে স্থান নির্ধারণ এলাকাবাসী ও ইজারাদারের মধ্যে সৃষ্টি হয় মতদ্বন্দ্ব। অভিযোগ উঠে ইজারাবিহীন এলাকায় পাড় কাটার। পরবর্তীতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বালু উত্তোলনের জায়গা নির্ধারণ করে দেয়া হয়।
এদিকে স্থানীয়দের আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া একটি প্রভাবশালী চক্র সুকৌশলে দখলে নেয় ইজারাবিহীন নদী তীরের জমি। কেউ কেউ দখলকারীদের কাছ থেকে চুক্তিনামার মাধ্যমে ক্রয় করেন নদী তীরের জমি। ইজারা বহির্ভূত এই জমিগুলো মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এসব জমি বালু ব্যবসায়িদের বিক্রি করে চক্রের সদস্যরা।
স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অনেকেই প্রথমে ইজারাদারদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন। পরবর্তিতে ইজারাকৃত স্থান নির্ধারণের পর স্বার্থ সিদ্ধিতে সক্রিয় হয়ে উঠে আন্দোলনে প্রভাব বিস্তার করা ব্যক্তিরা। সিন্ডিকেট গড়ে তুলে বালু ব্যবসায়ীদের কাছে রাতারাতি নদীর পাড় বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
নদীর পাড় কাটার ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল হক বলেন, যারা পাড় রক্ষার আন্দোলন করছিলতারাই এখন পাড় বিক্রি করছে। স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেট এই পাড় বিক্রি করে লাখ লাখ টাকার মালিক বনে গেছেন। এদিকে পাড় কাটার ফলে পর্যটন এলাকা হুমকির মুখে। ২১টি গ্রাম ভাঙন ঝুঁকিতে। আমরা চাই দ্রুতই প্রশাসন এই পাড় কাটা বন্ধ করুক।
যাদুকাটা-১ বালুমহালের ইজারাদার নাসির মিয়া বলেন, ইজারা নীতিমালা মেনে আমরা বালু উত্তোলন করছি। তবে একটি মহল আমাদেরকে বিপাকে ফেলতে পাড় কাটছে। পাড় কাটা ঠেকাতে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে। তারা আমাদের স্বেচ্ছাসেবকদের উপর হামলা করেছে। পাড় কাটা বন্ধে আমার নদীর তীরে বেড়া দিয়েছি। এক্ষেত্রে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, স্থানীয় কিছু লোক মব সৃষ্টি করে নদীর পাড় কাটার চেষ্টা করছে। পাড় কাটা বন্ধে স্থানীয় বিজিবি, পুলিশ ও নৌ পুলিশকে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। আমাদের তিনজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে রয়েছেন। পাড় কাটার সাথে যে বা যারা জড়িত তাদের তথ্য জানা হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ